বিগত কয়েকদিন ধরে অব্যাহতভাবে ঘনকুয়াশা পড়ায় মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের ফেরি সার্ভিস। এ নৌরুটে গত নয় দিনে ৭৩ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় চরমভাবে ব্যহত হয় রাজধানী ঢাকার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হন এসব অঞ্চলের যাত্রীরা।
কুয়াশার কারণে রাতে আসা নৈশ কোচগুলোকে পরের দিন সকালে ফেরি পারাপার হতে হচ্ছে। এছাড়া পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে ফেরি পারাপারের সিরিয়াল পেতে ২/৩দিন করে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই এসব যানবাহন শ্রমিকদেরও। সবমিলিয়ে যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জান গেছে, প্রতিদিনের মতো গত ( ২৫ জানুয়ারি) সোমাবার দিবাগত রাত পোনে তিনটা থেকে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একটানা প্রায় ৭ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এ নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ( রবিবার ) থেকে ২৬ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত মাঝে শুধু বুধবার বাদে ঘনকুয়াশার কারণে গত নয় দিনে ৭৩ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
এরই মধ্যে ১৭ জানুয়ারি গত রবিবার ৮ঘণ্টা, সোমবার সাড়ে ১০ ঘণ্টা, মঙ্গলবার সাড়ে ৮ ঘণ্টা, বৃহস্পতিবার ৮ঘণ্টা, শুক্রবার ৯ঘণ্টা, শনিবার ৬ঘণ্টা, রবিবার (২৪ জানুয়ারি) ১২ ঘণ্টা, সোমবার ৪ঘণ্টা, আজ মঙ্গলবার ( ২৬ জানুয়ারি) ৭ ঘণ্টা। এতে যানবাহন পারাপারও অনেক কমে গেছে। ফলে প্রতিদিনই পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা বাড়ছে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পারাপার করা হলেও অপেক্ষামান যানবাহনের চাপ রয়েছে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে।
পাটুরিয়ায় আটকে পড়া যানবাহনের দীর্ঘ লাইন
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মু. জিল্লুর রহমান বলেন, বিগত কয়েকদিন যাবৎ প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর নদীতে কুয়াশা পড়তে থাকে। একপর্যায়ে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। কুয়াশার প্রকোপ কেটে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। বেশ কিছু দিন ধরে একই অবস্থা চলছে। এতে প্রতিদিনই দুই পাড়ে যানবাহনের চাপ বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যাত্রীবাহী গাড়ি এবং জরুরি ও পচনশীল পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। অপেক্ষামান ট্রাকগুলোকে পর্যায়ক্রমে সিরিয়াল অনুযায়ী ছাড়া হবে। ঘনকুয়াশা পড়া বন্ধ হলে এ পরিস্থিতি থাকবে না বলে তিনি জানান।
ব্রেকিংনিউজ/এসপি