খুলনার ৯টি উপজেলায় বোরো ধান রোপনের ধুম পড়েছে। আর সময় না থাকায় শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে কৃষক মাঠে মজুর নিয়ে কাজ করছে। আগাম জমি প্রস্তুত করে কে কার আগে ধানের চারা রোপণ করবেন। এনিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে।
খুলনা জেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয় ডুমুরিয়া উপজেলায়। জেলায় এ বছর ৫৭ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বেরো আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলায় ২১ হাজার ৩শ‘ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আর লবণাক্ত অঞ্চল দাকোপ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮৫ হেক্টর জমিতে।
এদিকে প্রত্যন্ত উপজেলা কয়রায় লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল ৪ হাজার হেক্টর, সেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে।
দাকোপ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই জানান, ‘গত আমন মৌসুমে ধানের ফলন এবং বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি।
রূপসা উপজেলার কৃষক আবদুল আলিম বলেন, গেল বছর ১২ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। মাঠে ধানও মোটামুটি ভালো হয়েছিল। কিন্তু সেবার করোনার কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। ধান কাটতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়েছিল। গেলবার ধান চাষের খরচা তুলতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সব ক্ষতি পোষাতে এ বছর আবারও বীজতলা তৈরি করে বোরো আবাদ করেছি।
কয়রা উপজেলার কৃষক ইনছার আলী বলেন, জমি প্রস্তুত। কয়েকদিন পর বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করবো জমিতে রোপনের জন্য। বোরো ফসলটি ভালো হলে পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারব।
কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম মিজান মাহমুদ বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৪ হাজার হেক্টর, উফসী ২হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে বোরো চারা রোপন শুরু হয়েছে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বীজতলা থেকে শুরু করে ধানখেতে বোরো আবাদ ভাল হয়েছে। এখনো পর্যন্ত বড় ধরণের কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। শীতে যদিও ছোট্টখাট্ট সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে তা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশা করি এ বছর বোরো আবাদ ভাল হবে। এছাড়া কৃষকেরাও পাবে অধিক পরিমাণ ধান।
ব্রেকিংনিউজ/এসপি